হঠাৎ করে কু-দৃষ্টিতে লিপ্ত ব্যক্তির ইন্টারনেট ব্যবহারের হুকুম


প্রশ্ন: এক ব্যক্তি নামাজী। এবং সে সুন্নতের অনুসারী। বিভিন্ন কারণে তার ইন্টারনেট ব্যবহার করতে হয়। যেমন একাডেমিক, প্রফেসনাল প্রয়োজন। চাকরী খোঁজা, তথ্যমূলক বিষয়াদি খোঁজা ইত্যাদি। সে ইন্টারনেটে হকপন্থী বিভিন্ন সাইট থেকে বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান লাভ করে। এগুলো শেয়ার করে মানুষকে অবগত করে। এবং বাতিলপন্থীদের বিভিন্ন বক্তব্যের শিক্ষণীয় জবাবও প্রদান করে থাকে। এতে তার নিজের ও অন্যদের বেশ উপকার হয় বলে বাহ্যিকভাবে মনে হয়। কিন্তু সমস্যা হলো,হঠাৎ হঠাৎ অল্প সময়ের জন্য তার নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ থাকে না। এবং সে ইচ্ছকৃতভাবে চোখের খিযানত বা কু-দৃষ্টিতে লিপ্ত হয়। কিছুক্ষণ পর আবার তার চেতন ফিরে আসে। সে তাওবা করে এবং লজ্জিত হয়। আর কু-দৃষ্টি করবো না বলে প্রতিজ্ঞা করে। কিন্তু কিছুদিন পর আবার ইচ্ছকৃতভাবে সেই গুনাহে লিপ্ত হয়।
উল্লেখ্য, ইন্টারনেট ব্যবহার করে বৈধ ও প্রয়োজনীয় উদ্দেশ্যে। কিন্তু হঠাৎ করে তা অন্যদিকে মোড় নেয়। সে নিয়মিত ইন্টারনেট ব্যবহার করে এবং এরকম কু-দৃষ্টি ও অনুতপ্ত হওয়ার ঘটনা কিছুদিন পরপরই সংঘটিত হয়। গড়ে আনুমানিক সপ্তাহে বা মাসে দুই /তিনবার বা তার কম বেশি। এঅবস্থায় সে মাঝেমাঝে ইন্টারনেট ব্যবহার থেকে একেবারে বিরত হতে চায়। কিন্তু তার উপকারী ও প্রয়োজনীয় দিকগুলোর কারনে আবার বিরত হয় না। আলোচ্য ব্যক্তির জন্য ইন্টারনেট ব্যবহারের হুকুম কি? যদি না জায়েজ হয়,তাহলে তা কত দিন কত মাস পর্যন্ত বহাল থাকবে।

উত্তর: কু-দৃষ্টি একটি জঘন্য ও ভয়ংকর অপরাধ। এর থেকে বহু গোনাহের সূচনা হয় ৷হাদীসে এই কু -দৃষ্টি সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে ” কু- দৃষ্টি শয়তানের একটি বিষাক্ত তীর। যে আল্লাহর ভয়ে তা থেকে বিরত থাকবে আল্লাহ তাকে এমন ঈমান দান করবেন যার মিষ্টতা সে অনুভব করবে’ (তারগীব ৩/৯২পৃষ্ঠা) এ বিষয়ে আরো বহু হাদীস বর্ণিত হয়েছে। সুতরাং এমন জঘন্য অপরাধ থেকে বেচে থাকা সকলের জন্যই আবশ্যক। অতএব, প্রশ্নে আলোচ্চ্য ব্যক্তির যদিও ইন্টারনেট ব্যবহার করার কিছু যৌক্তিক প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু এই প্রয়োজন অবশ্যই অন্যভাবে পূরণ করা সম্ভব। অপরদিকে যেহেতু তিনি কু -দৃষ্টির মত একটি ভয়ংকর অপরাধ থেকে বিরত থাকতে অক্ষম হচ্ছেনা তাই আত্মনিয়ন্ত্রণ অর্জন করা পর্যন্ত ইন্টারনেট ব্যবহার না করাই তার জন্য সঙ্গত।
উল্লেখ্য, কু-দৃষ্টি থেকে বাচাঁর জন্য বা আত্মনিয়ন্ত্র অর্জনের জন্য অপরিহার্য হল আল্লাহ ওয়ালা কোন আলেমের সোহবত গ্রহণ করে দীর্ঘ সাধনা করা। আর এসব কিছুর জন্যই সর্বপ্রথম সদিচ্ছার প্রয়োজন।

সূত্র: সুরা আনআম : ১২০; সুরা নুর : ৩০; সুরা মুমিন : ১৯; তারগিব ও তারহিব : ৩ : ৯২

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় ফতোয়াসমূহ

গর্ভপাতের পর নামাজ

মুসাফির অবস্থায় জামাতে নামাজ এবং রাকাত সংখ্যা

দোয়া কুনুত না পড়ে রুকুতে চলে গেলে কী করবে?

কবর খননের সুন্নত পদ্ধতি

তাহাজ্জুদ, আউয়াবিন ও অন্যান্য নফল নামাজ জামাতে পড়ার বিধান